Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

নদী ও বিল

আঠারো আনার বিলঃ

আঠারোয়ানার বিল ১১নং বড়বালা ইউনিয়নের একটি উল্লেখযোগ্য স্থান। বড়বালা ইউনিয়নের বড়বালা মৌজার সর্বউত্তরে  ছড়ান বাজার হইতে সাহেবগঞ্জ গামী রাস্তার পূর্বপার্শ্বে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত স্বল্প আয়তনের জলাধারটিই আঠারো আনার বিল নামে পরিচিত। খুব সম্ভবত এই ঐতিহ্যবাহী এ বিলটির জমির খাজনার মূল্য আঠারো আনা ছিল বলে এরূপ নামকরণ হয়েছে। বড়বালা ইউনিয়নের প্রাকৃতিক পার্ক স্থাপনের জন্য এই মনোরম জলাধারটিকেই নির্বাচিত করা হয়েছে। সরকারি অথবা ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে কিছু বসার স্থান তৈরী করা হলে এবং পার্কের জন্য কিছু সরঞ্জাম ক্রয় করলে চিত্ত বিনোদনের একটি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। ভবিষ্যতে এটি শিশুকিশোরদের সাঁতার কাটা ও বিকেলের বিশ্রাম-বিনোদনের স্থান হিসেবে এই বিলটি ভূমিকা রাখবে।


ঘিরনই নদীঃ

বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর থেকে উৎপত্তি হয়েছে ঘিরনই নদী। রংপুর জেলার বদরগঞ্জ হয়ে মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নে বারঘরিয়া ইদগাহ মাঠ হয়ে তরফবাহাদী মৌজা দিয়ে তরফ গঙ্গারামপুর মৌজা দিয়ে ১২ নং মিলনপুর ইউনিয়নে মধ্য দিয়ে নবাবগঞ্জে  ত্রিমহনিতে শেষ হয়েছে এবং যমুনেশ্বরী নদীতে মিলিত হয়েছে। এই নদীতে কোন ব্যারেজ এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নেই। বড়বালা ইউনিয়নের ঘিরনই নদী তীরবর্তী মৌজা সমূহ- বারঘরিয়া, তরফবাহাদী ও তরফগঙ্গারামপুর। বন্যার সময় বড়বালা ইউনিয়নের মৌজা সমূহের কৃষি ফসলসমূহ পানির নীচে তলিয়ে যায় এবং কৃষকগণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়।


যমুনেশ্বরী নদীঃ

আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে,

বৈশাখ মাসে তার হাটু জল থাকে।

কবিগুরু রবি ঠাকুরের ছোট নদী কবিতার যেন পূনরাবৃত্তি ঘটেছে বড়বালা ইউনিয়নের যমুনেশ্বরী নদীর ক্ষেত্রে। রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার কতুবপুর ইউনিয়নের নাগের হাট ব্রিজ হইতে ঈষৎ পূর্ব দিক দিয়ে বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়ন ঘেঁষে পশ্চিম দিক দিয়ে দক্ষিণে মিলনপুর ইউনিয়ন পর্যন্ত বিশাল এলাকাজুড়ে বড়বালা ইউনিয়নে যমুনেশ্বরী নদী বেষ্টন করে আছে। বড়বালা ইউনিয়নের যে সকল মৌজা যমুনেশ্বরী নদীর কূলে অবস্থিত সেগুলো হলোঃ-গুটিবাড়ী,পূর্ববড়বালা,আরাজি শীবপুর,আটপুনিয়া, হরেকৃষ্ণপুর কেশবপুর ও পলিরামেশ্বরপুর। বিভিন্ন প্রজাতির সুস্বাদু মাছে ভরপুর এই যমুনেশ্বরী নদী। নদীর তীরবর্তী অনেক মানুষের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র বাহন এ নদীর মাছ ধরা। জেলেরা সারাবছর এই নদীতে মাছ শিকার করে পরিবারের ব্যয়ভার বহন করে থাকেন। যমুনেশ্বরী নদী অনেকের নিকট জীবিকা নির্বাহের পথ হলেও বেশীর ভাগের ক্ষেত্রে অভিশাপ হিসেবে বিবেচিত। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে বন্যার সময় নদী যখন তার গতিপথ পরিবর্তন করে তখন অনেক বাড়ীঘর ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায় এবং শস্যভরা মাঠ বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যায়। আর তখনি কৃষকদের মাথায় হাত পড়ে যায়। বন্যার পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন স্থানে চর সৃষ্টি হয় আর কাশফুলে ভরে যায় নদীর তীর। আর শিয়ালের যেন হাট বাজার।

বর্তমানে যমুশ্বেরী নদীর তীরে জেগে ওঠা ধূ-ধূ বালু চর সবুজ ফসলে ভরে গেছে। ক’বছর আগেই সেখানে জায়গা-জমির কদর ছিল না। সর্বনাশা যমুনেশ্বরীর কাল গ্রাসে ঘর-বাড়ি হারিয়ে মানুষ হয়েছে নিঃস্ব। অভাব-অনটন ছিল নিত্যদিনের সাথী। এখন ধূ-ধূ বালু চরে উজান থেমে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও বন্যায় পলিমাটি জমায়, চরগুলি উর্বর আবাদি জমিতে পরিনত হয়েছে।

চরের জমিতে আখ, মাসকলাই ভুট্টা, গোল আলু, মিষ্টি আলু (শ্যাকআলু), মরিচ, টমেটো, পটল, করলা, তিসি, ঢেরস, শাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি, গাজর, মূলা ও ধনিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের রবি ফসল চাষ করে এ অঞ্চলের মানুষ অভাবকে করেছে জয়। রবি ফসল উৎপন্ন হওয়ায় চরের জমির দাম হয়েছে আকাশচুম্বী। ফসলের কারণে চর গুলি যেন দিগন্ত বিস্তৃত দৃষ্টি জুড়ানো সবুজ ফসলের ক্ষেত।

কৃষি বিভাগ থেকে অর্থকরী ফসল চিনাবাদাম ও মশুরের ডাল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে পারলে কৃষকরা আরও বেশি লাভবান হবে বলে আমার বিশ্বাস।